রংপুর পীরগঞ্জের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী চুমকিকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিয়াদ প্রধানের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত।
রায়ে সহযোগী আসামি গৃহ পরিচারিকা ধলি বেগমকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর জজ আদালতে রায় প্রকাশের রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোস্তফা পাভেল রায়হান এ রায় দেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের রামনাথপুর প্রধানপাড়ার শাজাহান আলীর কন্যা তানজিলা খাতুন চুমকি। সে দুরামিঠিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী। ২০১৬ সালের ১৪ জুন বিকালে বিকালে বাড়ির পাশে খেলছিল চুমকি।
এ সময় প্রতিবেশী আব্দুল মমিন প্রধানের কলেজ পড়ুয়া ছেলে রিয়াদ প্রধান (তৎকালীন বয়স ছিল ২০ বছর) স্কুলছাত্রী চুমকিকে আম দেয়ার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে।
এ সময় শিশুটি চিৎকার দিলে ধরা পড়ার ভয়ে আসামি রিয়াদ তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে বাড়ির গৃহকর্মী ধলি বেগমের সহায়তায় সিমেন্টের বস্তায় ভরে লাশ খাটের নিচে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখে। ঘটনার ৩ দিন পর ১৭ জুন রিয়াদের জ্যাঠাতো ভাই হাসান আলী প্রধান এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী রিয়াদকে পীরগঞ্জ থানায় সোপর্দ করে।
এরপর চুমকিকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে লাশের অবস্থান জানালে পুলিশ ওইদিনই রিয়াদের ঘরের মেঝে খুঁড়ে চুমকির গলিত লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রিয়াদকে প্রধান আসামি এবং গৃহপরিচারিকা ধলি বেগমকে সহযোগী আসামি করে চুমকির বাবা শাজাহান থানায় হত্যা মামলা করেন।
১৮ জুন রিয়াদ চুমকিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ওই গৃহপরিচারিকার সহায়তায় মেঝেতে পুঁতে রাখার কথা বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি দেয়। ঘটনার পর পালিয়ে যান গৃহকর্মী ধলি বেগম। বেশ কিছুদিন পর ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শেষে ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
চার বছর বিচারাধীন থাকার পর মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করা হয়। এতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ছাড়াও এক লাখ জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট কাজী মাহফুজুল ইসলাম। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাওছার আলী সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান।