‘মাসোহারা’ না পেয়ে অভিযানের নামে সাত লাখ টাকার ওষুধ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ৭ নম্বর ক্যাম্পের ইনচার্জ জেপি দেওয়ানের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে কুতুপালং টিভি টাওয়ার সংলগ্ন এ ক্যাম্পের ফারজানা ফার্মেসির ওষুধ পোড়ানোর ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সিআইসিসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ফার্মেসি মালিক নুরুল হক। নুরুল হক হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁপালং গ্রামের বাসিন্দা।
ফার্মেসি মালিক নুরুল হক বলেন, ‘আমার সম্বল যা ছিল সব দিয়ে ফার্মেসি করেছিলাম। আজ ক্যাম্পের কাটাতার সংলগ্ন ফার্মেসিতে আমার অনুপস্থিতিতে এবং বিনা নোটিশে অভিযানের নামে সাত লাখ টাকার ওষুধ পুড়িয়ে ফেলা হয়। ফার্মেসিতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। অথচ ক্যাম্পের ভেতরে অসংখ্য রোহিঙ্গা ফার্মেসিসহ নানা ব্যবসা বহাল তবিয়তে আছে।
তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর একজন হিসেবে ফার্মেসি করেছিলাম, তা-ও ক্যাম্পের ভেতরে নয়। আমি এর আইনি প্রতিকার এবং ক্ষতিপুরণ দাবি করছি।
নুরুল হক বলেন, ‘মাসোহারা না পাওয়ার কারণে ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন ওই সিআইসি। কারণ, ইতোপূর্বে তার নিয়ন্ত্রণে থাকা কমিউনিটি মোবিলাইজার মো. আজিজ, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) সদস্য জসিম, রুবেলসহ আরও একজন নিয়মিত মাসোহারা আদায় করেন। সিপিপি সদস্য জসিম আমার কাছ থেকে দুই দফায় ১০ হাজার টাকা আদায় করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ক্যাম্প ইনচার্জ জেপি দেওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার অফিসের আজিজ নামে একজনের সাথে কথা বলতে বলেন। সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে আর ফোন রিসিভ করেননি।
সিএম আজিজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত জানতে সিআইসি জেপি দেওয়ানের সাথে কথা বলতে বলেন। তিনি বলেন, ‘সিআইসি স্যার ক্যাম্পে যাওয়ার সময় ফার্মেসিতে থাকা লোকজন পালিয়ে গেলে তার নির্দেশে এসব করা হয়।’
অপরদিকে মাসোহারা আদায়কারী অভিযুক্ত সিপিপি সদস্য জসিমের সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন। এ ছাড়া, ফার্মেসির ওষুধ পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে আজিজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
এ ব্যাপারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজ্জা বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে সকল ফার্মেসি, ইলেকট্রনিক্স, জুয়েলারি শপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই হয়তো, অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।’ তবে ওষুধ জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংসের বিষয়টি তিনি খোঁজ নেবেন বলে জানান।