বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের মামলার মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে শনিবার দুপুরের দিকে গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে তোলা হয়। পরে রিমান্ডের আবেদন করা হলে তা মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের সন্ধানে চব্বিশ পরগনার অশোকনগরসহ একাধিক জায়গায় শুক্রবার দিনভর অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। এরই মধ্যে পিকে হালদারের প্রধান আশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত সুকুমার মৃধার সম্পর্কে জানতে পারে ইডি। এর কয়েক ঘণ্টা পর সুকুমার মৃধার অশোকনগরের ১৬২/৮ নম্বরের দক্ষিণ পল্লীর বাড়িতে অভিযান শুরু করা হয়। সেখানে সুকুমারের আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তির সন্ধান মেলায় তার বাসা থেকে বেশ কিছু দলিল, বাংলাদেশি ফোন নম্বর ও নথিপত্র সংগ্রহ করে নিয়ে যায় ইডি।
একপর্যায়ে রাতেই বাড়িটিকে সিলগালা করে দেন ইডির কর্মকর্তারা। সুকুমারের বাড়ির প্রধান ফটকে ইডির তরফে একটি নোটিসও টাঙিয়ে ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’-এর ১৭ ধারার ১এ উপধারায় তার সম্পত্তি ফ্রিজ করার কথা বলা হয়। শনিবার সকালে সে খবর জানাজানি হতেই সুকুমারের বাড়ির বাইরে ভিড় জমান অনেক উৎসাহী মানুষ। বাইরে থেকে উঁকি মেরে অনেকেই ভেতরের দৃশ্য দেখার চেষ্টা করেন। তবে গোটা ঘটনাটি জেনে অনেকেই হতবাক হয়ে ওঠেন। এরপর দুপুর ২টার দিকে পিকে হালদার, তার স্ত্রী ও ভাইসহ মোট ছয়জনকে গ্রেফতারের খবর জানানো হয়। তবে কোথা থেকে পিকে হালদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইডির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে সেটা বলা হয়নি।
তবে অভিযান সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে অশোকনগরের ৩টি বাড়িতে একযোগে তল্লাশি শুরু করে ইডি। এর একটিতে থাকতেন সুকুমার মৃধার মেয়ে অনিন্দিতার জামাই। আটকের পর তাকে জেরা করেছে ইডি। মূলত অনিন্দিতার জামাইয়ের সূত্র ধরেই পিকে হালদারের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা যায়।
ইডি সূত্রে আরও জানা গেছে, সংস্থাটি বেশ কয়েকদিন ধরেই ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পিকে হালদারের অবৈধ সম্পদের খোঁজে তদন্ত ও অভিযানে নামে। পাশাপাশি শিবশংকর নামে আত্মগোপনে থাকা পিকে হালদারকে আটকেরও অভিযান শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত দেড়টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগর, রাজারহাট-নিউটাউনসহ কলকাতার অন্তত ৯টি জায়গায় অভিযান চালায় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি। ইডির ধারণা, দিল্লি ও মুম্বাইয়ে আরও অঢেল সম্পদ থাকতে পারে তার।
প্রসঙ্গত, শনিবার পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশের প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে দেশের কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। দেশে পিকে হালদার নামে পরিচিত তিনি।