রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। চার্জশিটে ২৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম। তবে সেখানে অভিযুক্তের সংখ্যা উল্লেখ করলেও বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হননি তিনি।
আদালত সূত্র জানায়, অভিযোগপত্রে ২৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে কারাগারে। বাকি ১৪ জন পলাতক রয়েছে।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার লম্বাশিয়া ডি-ব্লকে আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরসিপিএইচ) সংগঠনের কার্যালয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন মাস্টার মুহিবুল্লাহ। তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
৩০ সেপ্টেম্বর মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার পান উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দিন।
তদন্ত শেষে সোমবার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। আদালত সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতার ১৫ জনের মধ্যে সাতজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডে ৩৬ জনকে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হলেও সাতজনের ঠিকানা ও অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ফলে ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
মাস্টার মুহিবুল্লাহর সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস মিয়ানমার থেকে উচ্ছেদ হওয়া রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করতো। শরণার্থী শিবিরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দাবি তুলে ধরার প্রচেষ্টায় কাজ করতো মুহিবুল্লাহর সংগঠন এআরসিপিএইচ।
২০১৯ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ। ওই সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য হোয়াইট হাউজেও আমন্ত্রিত ছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফিরে এসে প্রত্যাবাসন নিয়ে পুরোদমে সহযোগিতার প্রচেষ্টা শুরুর পর তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তার মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তা হীনতায় ভোগায় সম্প্রতি তারা বাংলাদেশ থেকে কানাডায় আশ্রয় নিয়েছেন।
অন্যদিকে,অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়ে ক্যাম্পে জানাজানি হলে সাধারণ রোহিঙ্গারা মাস্টার মুহিবুল্লাহর হত্যাকারীদের দাবি জানান।