কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের জনগণের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে মা-মেয়েসহ পাঁচজন। ২১ আগস্ট ঘটনা ঘটলেও ২৩ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় উঠে পুরো দেশে।
ঘটনাটি নিয়ে মামলা হয় দুইটি। একটি গরু চুরির, অপরটি নারী নির্যাতনের। গরু চুরি মামলার পাঁচ অভিযুক্তের মধ্যে মা-মেয়ে তিনজন ( নারী) আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। অন্য মামলার তিনজন অভিযুক্ত আটক হয়ে জেল হাজতে আছেন।
একাধিক সূত্র জানায়, নির্যাতনের শিকার মহিলারা দীর্ঘদিন ধরে অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে বিভিন্ন থানায়। তবে নাম ঠিকানা নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তি। একেক থানায় ভিন্ন নাম ও ভিন্ন ঠিকানা! অপরাধ করতে গিয়ে ধরা পড়ে ওই নারীরাই সঠিক নাম ঠিকানা না দিয়ে প্রতারণা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এরপর গরু চুরির অভিযোগ উঠা সত্বেও মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে এলাকায় ঘুরানো ও নির্যাতন করায় জড়িতদের শাস্তির দাবী জানায় সকল মহল।
কিন্তু শাস্তি চাইতে গিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরানকে জড়ানোয় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠে ঘটনা কি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হচ্ছে?
আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েকটি চক্র ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ উঠে।
মামলায় চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরানকে অভিযুক্ত করায় তদন্তে নির্দোষ হলে চেয়ারম্যান মিরানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের পক্ষে ১৩ জন চেয়ারম্যান বুধবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা সকল চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে দাবী করেছেন, চেয়ারম্যান মিরান ষড়যন্ত্রের শিকার। ঘটনার দিন বিকাল পাঁচটার দিকে চেয়ারম্যান মিরান চট্টগ্রাম থেকে চকরিয়ার তার ইউনিয়ন হারবাংয়ে ফিরে ঘটনা জানতে পারে। সাথে সাথে ইউএনওকে অবহিত করেন। একই সময় ফোনে পুলিশ ফোর্স ডেকে এনে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে বুঝিয়ে দেন।
একাধিক সূত্র জানায়, চকরিয়ায় একেরপর এক গরু চুরি অব্যাহত থাকায় খামারী ও গৃহস্থালির লোকজন অতিষ্ঠ ও ক্ষতিগ্রস্ত। পালিত গরু চুরি হওয়ায় দরিদ্র পরিবারের অভিভাবক মেয়েকে বিয়ে দিতে না পারার মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটেছে। ফলে গরু চুরি নিয়ে দুইবছর ধরে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির প্রায় প্রতিটি সভায় অভিযোগ উঠে। পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা নানা উদ্যোগ নিয়েও গরু চুরি বন্ধ করতে পারেননি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত সহ গরুর মালিকদের মধ্যে গরু চুরি যাওয়ার আতংকের সাথে চোরের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল। হারবাংয়ে গরু চুরি হচ্ছে শুনে পূর্বেকার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে বিভিন্ন পেশার অভিজ্ঞজনের অভিমত।
ঘটনাটি তিনটি পৃথক টীম তদন্ত করছে বিধায় উপজেলা প্রশাসনের কেউই বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।